আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে স্কুল শিক্ষিকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় অংসাপ্রু মার্মা (২৪) নামে এক যুবককে আটক করেছে স্থানীয় জনতা ও পুলিশের যৌথ টিম।

বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের জারুলিয়াছড়ি এলাকার গহীন পাহাড় থেকে স্থানীয় মার্মা সম্প্রদায়ের লোকজনের সহযোগিতায় তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক।

এর আগে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথে নাইক্ষ্যংছড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার ছিনতাইয়ের শিকার হন।

ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার জানান, “স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার সময় অংসাপ্রু মার্মা পথরোধ করে আমাকে মারধর করে। আমি মাটিতে পড়ে গেলে সে আমার ব্যাগ, মোবাইল ফোন, ব্যাংক চেক ও কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।”

ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসন, শিক্ষক সমাজ এবং স্থানীয় হেডম্যান–কারবারিদের উপস্থিতিতে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজির করার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অংসাপ্রু মার্মাকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

আটক অংসাপ্রু মার্মা নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ধুংরী হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা মংহ্লা প্রু মার্মার ছেলে।

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ফুটবল খেলোয়াড় ও মার্মা সম্প্রদায়ের নেতা উছাই মং মার্মা বলেন, “অপরাধীর কোনো জাত বা ধর্ম নেই-অপরাধী অপরাধীই। এ ঘটনায় আমরা মার্মা সমাজ হিসেবে গভীরভাবে লজ্জিত ও মর্মাহত। তবে এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় অপরাধীকে ধরতে পেরেছি-এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।”

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি মাসরুরুল হক বলেন, “অংসাপ্রু মার্মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হবে। নাইক্ষ্যংছড়িতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সর্বদা বদ্ধপরিকর।”

বর্তমানে আহত শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার নাইক্ষ্যংছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ির শিক্ষক সমাজ দ্রুত বিচার ও অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।